গল্পটা একজন স্বপ্নবাজের। কামরুল হাসান চৌধুরী (ফাহিম) |
গল্পটা একজন স্বপ্নবাজের।
- ২৫ মে ২০২১

স্ট্যান্ট শব্দটির সাথে পরিচিত নন এমন মানুষ অনেক কমই আছে। ইংরেজি এ শব্দের অর্থ হলো কৌশলজনিত খেলা। বাংলাদেশে বাইক স্টান্ট এবং সাইকেল স্টান্টগুলো শহরে বসবাসকারী লোকজনেরা দেখেন।
ইউটিউব বর্তমানে বাংলাদেশসহ পুরো পৃথিবীতে খুব জনপ্রিয়। ফ্রি ভিডিও শেয়ারিং প্লার্টফর্মটিতে চাইলে পৃথিবীর যেকোনো স্মার্টফোন ব্যবহারকারী ভিডিও আপলোড এবং দেখতে পারবে। আজকের সাক্ষাতকার একজন স্টান্ট রাইডার এবং ইউটিউবারকে নিয়ে।
ইউটিউব, ফেসবুক সহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তিনি আর.এস ফাহিম চৌধুরী নামে পরিচিত। তিনি একজন প্রফেশনাল স্টান্ট রাইডার এবং ইউটিউবার। তার ব্যক্তিগত ফেসবুক ফলোয়ার সংখ্যা ১ লক্ষ ২৬ হাজার এবং ফেসবুক পেইজে অনুসারীর সংখ্যা ৭ লক্ষ ১২ হাজার। ইউটিউবে তার সাবস্ক্রাইব সংখ্যা প্রায় ৭ লক্ষ।
আর.এস ফাহিম চৌধুরী এর আসল নাম কামরুল হাসান চৌধুরী। মা এবং দুই বোনের পরিবারে একমাত্র ছেলে তিনি। কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে তার জন্ম হলেও শৈশব কাটে ঢাকার মোহাম্মদপুরে।
ধানমন্ডি আইডিয়াল কলেজ এবং মোহাম্মদপুর সেন্টাল ইউনিভার্সিটি থেকে পড়াশোনা করেন তিনি।
ছোট্ট এক সাক্ষাতকারে কিছুক্ষণ চলে প্রশ্ন উত্তর।
কামরুল হাসান চৌধুরী (ফাহিম) -শৈশবের তেমন কোন স্মৃতি মনে নেই তবে আগে আমার কাউকে টাকা দেওয়া লাগতো না সবাই আমাকে দিতো কিন্তু এখন চিত্র সম্পূর্ণ ভিন্ন। এই ব্যাপারটা মিস করি।
দেশ ওয়েভ- বাইক স্ট্যান্ট এর সাথে কিভাবে যুক্ত হওয়া হয় এবং উল্লেখযোগ্য কোথায় কোথায় বাইক স্ট্যান্ট করেন?
কামরুল হাসান চৌধুরী (ফাহিম)- আমার অনেক আগে থেকেই বাইকের প্রতি আকর্ষণ ছিল। মেট্রিকের আগে যখন আমি বাসায় বাইকের জন্য আবদার করি আম্মুর কাছে তখন আমাদের আর্থিক অবস্থা তেমন একটা ভালো ছিল না সে কারনে আম্মু তখন আমাকে কিনে দিতে রাজি হননি। সে কারনে আমি রাগ করে মেট্রিক পরীক্ষার আগে বাসা থেকে বের হয়ে যাই। আমার প্রথম মেট্রিক পরীক্ষা আমি বাসার বাহিরে থেকে দেই। পরে আমাকে প্রথম ৭০০০ টাকা দিয়ে একটা সাইকেল কিনে দেয় এর পরে ২০১২ থেকে আমি সাইকেল স্ট্যান্ট শুরু করি।আস্তে আস্তে আমাদের একটা সাইকেল স্ট্যান্ট গ্রুপ তৈরি হয়ে যায় যেখানে আমরা সবাই স্ট্যান্ট করতাম এবং যারা করতে চাইতো তাদেরকে শিখাতাম । ২০১৭ সালে আমার এক ঘনিষ্ঠ বন্ধু মারা যায় । ওর অনেক ইচ্ছা ছিল বাইক স্ট্যান্টকে বাংলাদেশের সকলের কাছে তুলে ধরার। এর পর ওর ইচ্ছে নিয়েই আমার আগানো ।
আমরা এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের ৪০ জেলায় বিভিন্ন স্ট্যান্ট জনগণের কাছে তুলে ধরেছি।
আল্লাহ্'র রহমতে এখন পর্যন্ত ৩০০ এর বেশি স্ট্যান্ট সম্পর্কিত আয়োজনে অংশগ্রহণ করেছি।
দেশ ওয়েভ- ইউটিউবে কিভাবে আসা হয়?
কামরুল হাসান চৌধুরী (ফাহিম)-সাইকেল স্ট্যান্ট বলেন বা বাইক স্ট্যান্ট বলেন বাংলাদেশের সকলের কাছে পৌঁছানোর আমার একটা মাধ্যমের প্রয়োজন ছিল । সে থেকেই ইউটিউব চ্যানেল খোলা। ২০১৫ সালে আমি আমার প্রথম ইউটিউব চ্যানেল খুলি। সেখানে আমি আমার সাইকেল স্ট্যান্ট এর ভিডিও আপলোড করতাম এরপর ব্লগ করা শুরু করলাম। মানুষ আমার ব্লগ উপভোগ করতো। তাই তারপর থেকে এখন পর্যন্ত চেষ্টা করি প্রতিদিন অথবা কিছুদিন অন্তরে অন্তরে ব্লগ আপলোড করার।
দেশ ওয়েভ- আপনার একটা মিউজিক ভিডিও "প্রিয়া রে" যা দর্শকের মাঝে ভালো সাড়া ফেলে, তো অভিনয়ে কিভাবে আসা হলো?
কামরুল হাসান চৌধুরী (ফাহিম)- আমাকে দিয়ে আসলে অভিনয় হয় না শখের বসে এবং মানুষকে প্রতিদিনের ব্লগের পাশে নতুন কিছু দিতেই ৩ টি মিউজিক ভিডিও বানানো হয়েছিল। আমার ৩য় মিউজিক ভিডিও 'প্রিয়া রে' বানাতে আমার খুব পরিশ্রম করেছি এবং মানুষের ভালোবাসাও বেশি পেয়েছি।
দেশ ওয়েভ- মাঞ্জিয়া আপু এবং আর.এস ফাহিম দুইজন কিন্তু সোস্যাল মিডিয়ায় অন্যতম সেরা জুটি, তো আপনার সাথে কিভাবে প্রথম দেখা হয় এবং আপনারা কিভাবে প্রেমে পড়লেন?
কামরুল হাসান চৌধুরী (ফাহিম)- ২০১৮ সালে আমি একটা রেস্টুরেন্ট দেই সেখানে মাঞ্জিয়ার সঙ্গে আমার প্রথম দেখা হয়। এরপর থেকেই কথা চললো নিয়মিত। কখনো আনুষ্ঠানিক ভাবে ভালোবাসি বলে প্রেমের প্রস্তাব দেওয়া হয়নি কথা হতে হতেই প্রেম হয়ে গেলো।
কামরুল হাসান চৌধুরী (ফাহিম)- বর্তমান ব্যস্ততা যাচ্ছে ব্লগ নিয়ে। ব্লগ দিয়েই মূলত আমার আয়। যেহেতু আমার পরিবার আছে আমার সাথে যেই ছেলেরা থাকে ওদেরও আমার দেখা লাগে তাই কষ্ট করে হলেও প্রতিদিন ব্লগ করার চেষ্টা করি। কষ্ট করতে হবে বড় হতে হবে আপাতত এইটাই মূল লক্ষ্য।
দেশ ওয়েব- নতুন যারা ইউটিউবিং এ আসতে চায় তাদের কি পরামর্শ দিতে চান?
কামরুল হাসান চৌধুরী (ফাহিম)-নতুনদের পরামর্শ দিব ভালো কন্টেন্ট তৈরি করার । কখনো হতাশ হওয়া যাবে না ভিউজের জন্য থাম্বনেইল টাইটেল, কালার ,কনসেপ্ট এইগুলোর দিকে খেয়াল রাখতে হবে। কষ্ট করতে হবে একদিন না একদিন ভালো কিছু আসবেই।
আপনার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কি?
কামরুল হাসান চৌধুরী (ফাহিম)- আমি ছোট থেকে কষ্ট করে আসছি কষ্ট করে যেতে চাই । জীবনে অনেক টাকা ইনকাম করতে চাই পরিবারের সাথে অসহায় মানুষের জন্য কাজ করতে চাই । জীবনের একটা সময় আমি রাজনীতিতে অংশগ্রহণ করতে চাই। নিজের টাকায় সিটি কর্পোরেশনের কাজ করতে চাই যদি কখনো বড় হইতে পারি ইনশাহ্ল্লাহ ।
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
কামরুল হাসান চৌধুরী (ফাহিম)- আপনাকেও ধন্যবাদ, দেশ ওয়েভ'কে শুভকামনা।
Comments